এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

উপন্যাস পৌরানিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine ,

 উপন্যাস পৌরানিক দুর্ভিক্ষ, 

Nobel Civic Famine ,

পার্ট - 11

উপন্যাস পৌরানিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine ,
উপন্যাস পৌরানিক দুর্ভিক্ষ,

পর দিন সকাল হইলো সবাই আবার ছুটে আসলো আবুলের বাড়ি এলাকার পঞ্চায়েত সাব ও মাতাব্ব গণ এলেন এবং বলেন কিরে গুদু ভাত চুুর করলি ক্যান ছিঃ ছিঃ গিরামে এ্যান মুখ দেখাইমু  কিভায় লোকে আমগেরে ছিঃ ছিঃ করবো । পঞ্চায়েত সাব কইলো শুনো মিয়ারা গুদুর কাছে আগে শুনি দেথি ও কি বলে । তখন উপস্থিত সবাই কইলো এই আকালের সময় ভাত চুরির শক্ত বিচার চাই । পঞ্চায়েত সাহেব দমক দিয়িা বললেন , এই মিয়ারা থামো তোমরা , চুরের কাছে আগে শুনি কি ঘটনা ঘটছিলো । আাচ্ছা গুদু বলতো দেখি কি হয়ছিলো ? গুদু পঞ্চায়েতের পা ধয়রা কইলো মাতাব্বর সাব আমারে বাঁচান আমি গরীব অসহায় একমাত্র জনম দুঃখি মা ছাড়া আমরে আর কেউ নাই । পঞ্চায়েত সাব বললো আরে পা ছাড় কি হয়েছে খুলে কয় তারপর দেখি কি করা যায়। 



রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,

  Nobel Civic Famine.

পার্ট ১০

উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  Nobel Civic Famine
উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ

জালাবের লাশটা বয়ে নিতে পারে না , গুদুর মা তখন কলার মরা ডাটা জালাবের লাশের গলায় বেঁধে , গুদু আর ঝমেলা বেগম টেনে টেনে নিয়ে কবর দিলেন। জালাবে মরারর দুদিন পর সাথে দুদিনের উপোস খুদায় পরাণ যায় । খুদার চুটে আর থাকতে পারি না। দুপুরে বাড়ির পালান থেকে শাক তুলে নুন ছাড়া শাক ভাইজা খাইছি , এখন কি করি , আর তো পারি না , আর কত? পেটে পাথর বাইন্দা রাখমু । সারাদিন কোন কাজ খুজে পাই নাই। সন্ধ্যা হলো , পেটের জ্বলায় দুনিয়া আন্ধার হয়ে যাইতেছে। পাশের বাড়ি আবুল তরফদারের ঘর ঐ বাড়ি থেকে মুনে হয় খাবারের গন্ধ আহে যাই দেখি খাবার যোগাড় করতে পারি কি না?

আল্লা আমগেরে এতো ভাতর অভাব দিছে ক্যান? রাত যখন এটু বেশি হইলো গুদু আস্তে আস্তে আবুলের বউয়ের রান্না ঘরে ঢুকলো। গুদু যখন ভাত নিয়ে দরজার কাছে এলো , দরজার সাথে গুদুর ডান হাতের কুনুই লাইগা গেল । ঠিক তখনি ঝং করে একটা শব্দ হলো । এমন সময় রান্না ঘরের শব্দ শুনে আবুলের বউয়ের  ঘুম ভাঙ্গা গেল । শব্দ শুনে আবুলের বউ আবুলকে ডেকে তুললো ,এই ঘুমায়ছো কিযেন একটা শব্দ হইলো । অমনি দুজনে উঠে গুদুকে আবুল ধরে ফেললো । আবুল আর আবুলের বউ চিৎকার শুরু করলো । এই তোমরা কে কই আছো আমার চোর হান্দাইছে , এ আগায় আহ , চোর ধরছি । আশপাশে সাবাই হারে রে করে হাক ডাক দিয়া এলো। এদিকে গুদু আবুল আর আবুলের বউ পা ধরে কান্দা শুরু করলা আমার ভুল হইয়া গেছে , আজ দুইদিন ধরে না খাইয়া আছি , খিদার জ্বালা আর পরাণে সহে না চাচী মাফ কয়রা দেন । এমন ভুল আর জীবনে করমুনা। এর মধ্য সবাই জড়ো হলো কেউ আবার কিল ঘুষি মারলো । পাশের বাড়ির দুলাল মিয়া কইলো ওরে আম গাছের লগে বাইন্দা রাখ । সকালে পঞ্চায়েত ডাইকা ওর বিচার করমু। এই আবুল তুই পাহারা দে , এ্যাহন তোমরা সবাই যার যার বাড়িতে যাও। সকালে এ্যাহানে সবাই আবার আসবা । সবাই চলে গেল আবুল থাকলো পাহাড়ায়।



উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ, 

 Nobel Civic Famine.

পার্ট ০৯

উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  

করলো । ওদের ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদায় চারপাশ বিরহে ভরিী হয়ে গেল।  তোমার উপর আল্লা আছেন তিনি তোমারে দেখবো । গুদুর বউ সবে মাত্র পোতি হয়ছে , গুদুর মা ঝমেলার শরীলও তেমন ভালো না। জালাবের ঘটি বাটি গুছিয়ে সবাই মিলে বাড়ি ছেড়ে অজানা উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো । বাড়ি ছেড়ে যাবার সময় জালাবে আর জালাবের বউ বার বার ছনের কুঁড়ে ঘরের দিকে তাকিয়ে চখের জল ফেলছিলেন । আর মনে পড়ছিলো সুখে দুখে কত স্মৃতি ছনের কুঁড়ে ঘর নিয়ে। চলার পথে আকশে গুরুম করে ডাক দিয়ে নামলো বৃষ্টি গুদুর পোঁয়াতি বউ তাই বউকে একটা ফেন কঁচুর ডাটা এনে দিলো গুদুর মা ঝামেলা বেগম , এই নে বউ এটা মাথায় দে । আল্লা আমাদের ঠিকই একদিন রহম করবো । চিরদিন মানুষের দুঃখ থাকবো না । জালাবে  গুদুকে নিয়ে রেললাইনের পাশে সরকারি জমিতে একটা ঝুঁপরি করে কোনরকম একটা মাথা গুাজার জায়গা হলো । এদিকে জালাবের জ্বর উঠে গেল জ্বরে সারা শরীল থরথর করে কাঁপছে । বাড়ি থেকে বের হয়েই বৃষ্টি বাদল তো সব ওর উপর দিয়েই গেছে। মনে হয় এবার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেলে । তার মধ্যে আমার উপোস , এদিকে জালাবে জ্বর আরো বেড়ে গেলো বাবার চিন্তায় গুদুর চখে ঘুম নাই । রাত ভারী হয়ে এলো জ্বরের মধ্য জালাবে প্রলাপ বকতাছে । জালাবের বউ মাথায় পানি ঢালতাছে , এটু চুপ করে আল্লা করেন। এই এলাকায় একটা মাত্র ডাক্তার খেতিশ ডাক্তার  , এখন ডাক্তার ডাকার দরকার  কিভাবে ডাকি কন? ঐ ডাক্তারের জন্য বাড়ি ভিটা ছাড়া । গভীর রাতে জালাবে মারা গেল । অমনি ঝমেলা চিৎকার দিলো ওরে আল্লা গো চিৎকার শুনে গুদু আর গুদুর বউ দৌড়ায় যেয়ে কান্না শুরু করলো । পরদিন সকাল হলো এ সময় গুর খোড়া লোক পাওয়া যায় না। চারদিকে কলেরা মহামারী তার মধ্য আবার  অভাব । গুদু সবাইকে ডাকলো বাবা তো মারা গেছে তোমরা এটু আহ। পাড়ার প্রতিবেশীরা কেউ তার ডাকে সাড়া দিলো না। পাশের বাড়ির লেদু রশিদ আবুল তরফদার সকলেই কইলো এই কলেরার রোগী আমরা দাফন দিতে পারমু না এই রোগ আমগের হবো। মনে বড় দুঃখ নিয়ে চখে জল ফেলতে ফেলতে বাড়ি ফিরে এলো। তারপর গুদু আর ওর মা ঝমেলা বেগম  নিজেই পাশে রেললাইনের ধারে জঙ্গলে কোনরকম একটা গর্ খোড়ে। গুদু আর মা ঝমেলা বেগম বাড়ি এসে , বাড়ি এসে চিন্তা করলেন আমার এ্যাডা মাত্র পুলা যদি এ লাশ হাত দিয়া ধরি , আমি মরলে তো যায় আহে না , যদি পুলা আবার ময়রা যায়। থাক হাত দিয়া ধরা দরকার নাই। মরার গোসল না দিয়ে জালাবের লাশটা ছেড়া কাথা দিয়ে পেচিয়ে দিলো। দুজন মানুষে 


উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine.

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ, 

 Nobel Civic Famine.

পার্ট ০৮


উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  Nobel Civic Famine

বাকী খাতা দেখ কতো টাকা হয়ছে ? দুই চার পয়সা হলে কথা তাও একাটা কথা ছিলো ।  জালাবের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ! এতো টেকা! ডাক্তার সাব বললেন এতো টাকা কিভাবে দয়া করা যায় বল দেখি তুই আমারে ?  এখন আমার টাকা দে নয়লে বাড়ি ভিটা লিখে দে? জালাবে বললো ডাক্তার সাব আমি গরীব মানুষ , এতো টেকা আমি কেমনে দিমু ঐটুকু জায়গা আমার পৈতৃক ভিটা আমার বাপ দাদার স্মৃতি , আমি হেই জায়গা কেমনে লিখে দিমু ডাক্তার সাব , এটু রহম করেন আল্লা আপনার প্রতি দয়া করবো । এটু দয়া করেন সামনে মৌসুমে ফসল কেটে শোধ করে দিমু । নয়লে আপনার বাড়ি আমার বউ আরো ছয় মাস ধান ভাইনা দিবো। তবুও এটু দয়া করুন।  ডাক্তার সাহেব বললেনে আমি তাহলে পঞ্চায়েত ডাকি তাহলে হলে ঠিকই তখন বুঝবি। দুদিন পর পঞ্চায়েত ডাকা হলো গ্রামের মোড়লরা সবাই এলো ,  মোড়ল সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন , কিরে জালাবে বাকী টাকা দিস না কেন? জালাবে বললেন এতো টাকা কোথায় পাবো মোড়ল সাব আমি তো গরীব মানুষ , নুন আনতে পান্থা ফুরায় । আমার প্রতি এটু দয়া করেন । আল্লা আপনাদের প্রতিও দয়া করবো । অমনি কেতিশ ডাক্তার বাকী খাতা বের করলেন এই দেখনে মোড়ল সাব বাকী পঞ্চাশ টাকা । মোড়ল  সাব বাকী খাতা দেখে রপগ করে বললেন , বাকী নেওয়ার সময় মনে থাকে না যে এতো টাকা াদতে পারবো না । এই বল টাকা কবে দিবি। জালাবে ভয়ে ভয়ে বললেন আমি এতো টাকা কোথায় পাবো হুজুর ? আমার প্রতি এটু করুন । মোড়ল সাহেব অমনি বলে উঠলেন দুই চার পয়সা হলে নয় দেখা যেত । এতো টাকা কি করে সম্ভব শুদে আসলে পঞ্চাশ টাকা! কি করে সম্ভব?  এখন তাহলে তুই ঠিক কর কি করবি ? অমনি খেতিশ ডাক্তারে কানে কানে বললেন নগদ আদায় করে দেন দশ টাকা আপনার আর নেইলে বাড়ি ভিটা লিখে দিতে বলেন। তখন মোড়ল সাব হুংকার দিয়ে বললেন এই অসভ্য ডাক্তার বাবুরে জমি লিখে দে। দমক খেয়ে ভয়ে জালাবে অমনি সাদা কাগজে টিপ সহি দিলেন। জালাবে চখের জল মুছতে মুছতে বাড়িতে গেলেন । বাড়ির উঠানে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে লাগলে আহারে এই মাটিতে জন্ম আমার আমি এই মাটি ছাইড়া কেমনে থাকমু কেমনে বাঁচমু , তোমারা আমারে কও , আমি বউ পুলা নিয়া কোথা থাকবো গো? ওরে আমার আল্ল গো আমারে এতো গরীব কেনে বানাইলা ? আমি আমার জন্ম স্থান ছাইড়া কেমনে থাকমু? জালাবে কান্নায় প্রতিবেশিরাও হু হু করে কান্না শুরু করলো । তারা বুঝাইলো ধৈয্য ধরো । পাশে জালাবের বউ হাউ মাউ করে কেদে উঠলো গুদুও ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদা শুরু 


উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ, 

 Nobel Civic Famine.

পার্ট ০৭


উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  Nobel Civic Famine

খেতিশ ডাক্তারের পুলার বিয়া , ডাক্তারের বউ কইলো তোমরা ধান ভানো আর গীত গাহান করো । খিদায় কি মুখে গান আসে?

আমগো দামন সাজিছে গো ,

চন্দ্র সুরুজের মতো করে গো,

পালকি দিয়া যাবো বিয়া,

সোনার খাটে বসিয়া ,

সুন্দর দামনো গো।

খেতিশ ডাক্তারের বউ কইলো তোমরা গীত কও পান খাওয়ামু পরে দুপুর হইলো পান্থা ভাত আর কাঁচা মরিচ দিলো  খাইয়া আবার ঢেকিতে উঠবা । বিয়ার ধান ভানা লাগবো তাই সারারাত লাগবো । আজকা রাতে ধান ভানবা কাল সারাদিন  ঘুম পাড়বা ।  ওদিকে জালাবে আর গুদু সারাদিন মাঠে কাম করলো । সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরলো । তাম করে দুই পঁয়সা করে বাড়ি নিয়ে এলো । আজ কয়েকদিন ধরে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া নাই , ধরতে গেলেই উপোস। আজ বালা চারডা খামু । জালাবে বাড়ি এসে বউকে ডাকলো বউ ও বউ কোন সাড়া নাই , ততে জালাবে বুঝতে পারলো বউ এখোনো ধান ভেনে বাড়ি ফিরে নাই ।  রাত করে বউ বাড়ি ফিরবো কিভায় যাই বউকে আগায় নিয়া আসি। এখান থেকে পোয়া মাইল দুরে । এখনো ঢেঁকির শব্দ হুনা যাই , কারণ কি? খেতিশ ডাক্তার জালাবেকে দেখে কইলো কিরে বাবা বাকি টাকা ফেরত দিতে আসছো বুঝি ? জালাবে বললো না ডাক্তার সাব আমগের পোনাইয়ের মা অহনো বাড়ি যাই নাই তাই খুঁজ নিতে আইছিলাম। ডাক্তার বললেন আমার ছেলেরে বিয়ে তাই বিয়ার ধান ভানতেছে। ঔষধের টাকা পঁয়সা তো কিছু দিলে না? তা যদি সংগে টাকা থাকে তাহলে দিয়ে যাও । শুন বাবা  তোমার বাবাও আমার কাছ থেকে অনেক টাকার  ঔষধ মারা গেছে । বাকী খাতায় অনেক টাকা হয়ছে। তর বাকী এখন অনেক দিন হলো । টাকা আমার চায়। জালাবে বললো কাদো কাদো গলায় , কত টেহা হইছে এহন ? ডাক্তার বলেন হয়ছে তো অনেক টাকা শুদে আসলে পঞ্চাম টাকা । জালাবে বললো এতো টেহা কি করে হইলো? আমি এ্যাহন এতো টাকা দিমু কেমনে ! এটু দয়া করেন । হা দয়া করবো 


উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  

Nobel Civic Famine

পার্ট ০৬

উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  Nobel Civic Famine

দোহায় চন্ডি  সিদ্ধশরী,

বাসুলি মা তোইবা ,

উত্তর দক্ষিণ বন্দনা করি,

কারুক কামাক্ষা,

বাসুলি মা তোইবা।

যাও এইযে ঝাইরা দিলাম , শক্ত  মর্দ ধরছিলো । আর কোন চিন্তা নাই। আর যাতে  না আছর করে সেজন্যে এতটা তাবিজ  দিয়া গেলাম আর কোন ডর নাই। যদি আবার কোন সময় ধরে তাইলে এই তাবিজ ধুয়ে পানি ছিটায় দিলে ছাইরা যাবো। তবে সাবধান ইলিশ মাছ গরুর গোশতো আগামী পনেরো দিন কোন ভাবেই খাওয়াতো দুরের কথা বাড়িতেও আনা যাবে না। ওদিকে বউ শাশুড়ি ধান ভাইনা সন্ধ্যা হয়ে হইলো বাড়ি ফিরছে মজুরী বাবদ আদা শের চাল আর এক চয়ন ভারার গুইরা দিছে , সাথে কিছুটা খুদ চাইলও দিছে। রাতে খাওয়ন দাওন হইলো তারপর নতুন বউ শুয়তে গেলো । এর আগে কোনদিন নতুন বউ ধান ভানে নাই তাই শরীলটা বিষ বেদনা করতেছে । পরের দিন সকালে না খেয়ে আবার বউ শাশুড়ি খেতিশ ডাক্তারের বাড়ি ধান ভানতে গেছে । এদিকে জালাবে আর মন্ডল বাড়ি গম কাটা কামলা দিছে। দুই পঁয়সা কয়রা মজুরী । সকালে গমকাটা কামলাদের খাবার দিছে গমের ছাতু । আর মণ্ডলেরা খাইলো ভাত আর গজার মাছের তরকারী । এই পাড়ায় হিন্দু বাড়ি মণ্ডল বাড়ি  এদের কোন অভাব নাই আর নইলে সবার অভাব আর অভাব। এদিকে বউ শাশুড়ি ধান ভানতেছে খিদায় পরাণ যাই। আর যেন পা চলে না । পরে ঝমেলা কইলো , আজকা কি পান্থা ভাতের পানি নাই? খিদায় জান যায় , আর তো পা চলে না। এ বাড়ির কেউ কোন সাড়া দিলো না। 


উপন্যাস , পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, Nobel Civic Famine

 উপন্যাস , পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ,  Nobel Civic Famine

    পার্ট ০৫

পৌরাণিক  দুর্ভিক্ষ


সাবার ঘরেই খাবার নাই । একবিঘা জমি লাগাইলাম তাতে একমুণ ধান পাইলাম মাত্র । কিছুটা গম বুনেছিলাম অইটাও ছাগল গরু নষ্ট কয়রা ফেলেছে । অহন কিযে করি। গুদুর বাপ যাই বক্কর কবিরাজের বাড়ি । বক্কর কবিরাজ ওকবিরাজ অমনি কবিরাজ সাড়া দিলেন , এই কেঠা আমি বাড়িত আছি । ওহ জালাবে তুমি তো মিয়া আমার ঘুম ভাঙ্গায় দিলা কেবলই একনেছা ঘুম আইছিলাম। কাল সারারাত তুরমুজের পুলা হুরমুজেরে ঝারছি । ওগো বাড়ির পাশে তেঁতুল তলায় সাত ভাইবোন থাকে পরায় চুষে খাইয়া ফালাইছিলো । অল্পের জন্য আমি থাইকা রক্ষা । জালাবে কইলো ও কবিরাজ পুলাতা আমার মইরা যাইতেছে । জন্মের পর থাইকা পুলাডার প্যান প্যানানি ছাড়তেছে না। তুমি এডা ঝারা দিয়া দেখউত্তর মুখ করে বসালেন তারপর বির বির করে ঝারা দিতে শুরু করলে এবার বক্কর কবিরাজ বললেন ওর উপর দৃষ্টির আচর হয়ছে। আমি ঝারা দিয়া ছাড়াই দিমু তবে পাঁচ আনা পঁয়সা একপোয়া চাল দুইডা রসুন তিনডা পিয়াজ পাঁচটা মঁরিচ এক খামচি লবণ , দেওয়া লাগবো । অমনি জালাবে বললো তুমি আমার মায়ের পেটের ভাই , আমার পুলারে এডা ঝারা দেও । আজ সারাদিন উপোস সকালে পুলা খিদার জ্বালায় নুন ছাড়াই শাক ভাইজা খাইছে । আমি মিয়া বাড়ি থাইকা ধান ভানা গুইরা এনে চিতয় বানায় খাইছি। পুলাডা আমার বাঁচাও কবিরাজ । বক্কর কবিরাজ বললেন হুনলাম তোমার কথা কিন্তু এইডা আমার গুরুর নিয়ম পালন করলে আমার বড় ক্ষতি হবো । আচ্ছা তোমার যখন বিপদ তাইলে আমি ঝারা দিয়া দেয় , তবে কথা অইলো আমারে পাঁচ আনা পয়সা দেওয়া লাগবাই। জালাবে বললো মাত্র পাঁচ আনা পঁয়সা আমার কাছে আছে বিপদ আপদের লাইগা লাখাছিলাম। আমার বউ ধান ভাইনা এই পাঁচ আনা পঁয়সা জমায় ছিলো । ঘরের খাম কেটে পাঁচ আনা পঁয়সা জালাবে বের করে বক্কর কবিরাজকে দিলা এই নাও কবিরাজ। এরপর কবিরাজ ঝারতে শুরু করলো ।


উপন্যাস পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ ,

                            পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ

                                                    পার্ট ০৪
পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ


 ভাঁইজা খায় , নুনেরও কি দামরে বাবা । পাঁচ টেহা শের  এতো টেহা পাইবো কই? ওদিকে গুদুর বাপ জালাবের ও খিদা সারাদনি না খাওয়া , পোলাডা তো নুন ছাড়া শাক  ভাঁইজা খাইছে। এ্যাহন কি করি যাই মণ্ডল বাড়ি ঢেকির শব্দ শুনা যায় । দেখি চারডা খুদ চাল দেয় কিনা? বড় চাচী বাড়ি আছেন নাকি ? হ্যা আছি বাবা , চাচী খিদায় আমার পরাণ যায় আমারে চারডা খুদ চাল দিবায়ন ? মণ্ডল বাড়ির বউ বললো ইরে বাপু তোমার আলাপ হুইনা বাঁচিনা , খুদ চাল আমগের গাভীন গরু খায় সময় বিষয় আমরাও খায়। তোমারে খুদ চাইল দিমু কিভায় , দিলেও তোমার চাচার কাছে হুনন লাগবো। না হুইনা দিলে আমারে আবার বকা ঝকা করবো । চাচী মিয়া মজুরী খাটছি এ্যাহনো টেহা পাই নাই , খিদায় তো পরাণ যাই গো চাচী , তাইলে আপনে গো ঐখানে থেইকা চারডা ভাড়ার গুইরা নেইগা । বাড়ি যাইয়া চিতয় বানাইয় খামু । মণ্ডল বাড়ির বউ বললো আচ্ছা বাপু তা নেউ গা। দৌড়ায় বাড়ি গিয়া পানি দিয়া ভাড়ার গুইরা গুলে নুন তেল ছাড়া চিতয় বানাই খায়।  হায়রে শালার খিদা আগে আমার মা চাট খই ভাঁইজা ডুল ভয়রা রাখছে আর মণ্ডল কাঁঠাল  চাট খই খাইছে ,  এ্যাহন শুদ খাইয়া ধনী অইছে ভাতেরে কয় অন্ন।   আর আমি চারডা খুদ চাইছি ঘরে খুদ রায়খা না করে ।এখন ওর বাড়ির ভাঁনরার গুইরা দিয়া চিতয় বানায় খায় ।  খিদার জ্বালায় মিটায়  হাইয়ে শালার ভাত । ভাতরে। ওদিকে ঝামেলা বেগম নতুন বউ নিয়া ধান ভানতে গেছে সারাদিন ধান ভানতেছে দুপুরে চারপা কাবার দিলো কিনা? কেঠা কইবো ? ওহন  আবার গুদু ঘটি নিয়া দৌড়ায়তেছে । নুন ছাড়া খালি শাক খাইছে এ্যাক সমানে পেটেরে অসুখ চলতেছে । এ্যাহন যদি ডাক্তার আনতে যাই তাইলে টেহা তো দিবার পারমু  না । আবার তো ডাক্তার কইবো আরো দুই মাস বউ দিয়া ধান ভাইনা দে। বউডা সারাদিন মানুষের বাড়ি ধান ভানে ,রাত হলে ঠিক মতো ঘুমায়তে পারে না। সারারাত বাতের বিষে চিৎকার করে । যাই বক্কর কবিরাজকে ডেকে আনি দেখি ঝাড় ফুঁক দেওয়ায় 

পৌরাণিক দুর্ভিক্ষ, ঔপন্যাস , Nobel civic Famine

                                            উপন্যাস, পোরাণিক দুর্ভিক্ষ